ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ২৪/০৭/২০২৩ ৯:৫২ এএম

১৯৮২ সালে ওষুধনীতি অধ্যাদেশ হিসেবে জারি হয়। এর মূল কথা ছিল, ওষুধের মান নিশ্চিত করবে কোম্পানি। নজরদারি ও দাম নিয়ন্ত্রণ করবে সরকার। কিন্তু ১৯৯৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ওষুধের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা কোম্পানির হাতে দেওয়া হয়। এরপর থেকে কোম্পানিগুলো ইচ্ছেমতো দাম নির্ধারণ করে। তবে অত্যাবশ্যকীয় তালিকাভুক্ত ১১৭টি জেনেরিকের ওষুধের দাম নির্ধারণ করে সরকার।

‘প্রাইস ফিক্সেশন পলিসি-১৯৯২’ বা মূল্য নির্ধারণ নীতি অনুযায়ী, প্রতিবছর অত্যাবশ্যকীয় তালিকাভুক্ত ওষুধের মূল্য সমন্বয় করার কথা রয়েছে। তবে ১৯৯২ সালে ওই নীতিমালা হওয়ার পর ২০১০, ২০১৩ ও ২০১৫ সালে তিন দফায় এগুলোর মধ্যে কিছু ওষুধের মূল্য পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছিল। সাত বছর পর ২০২২ সালে ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো ফের মূল্যবৃদ্ধির জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে আবেদন করে।

এরপর অধিদপ্তরের কারিগরি উপকমিটি এবং মূল্য নিয়ন্ত্রণ কমিটি ২০২২ সালের জুনে আগের ছয় মাসের আমদানি করা কাঁচামাল ও মোড়কসামগ্রীর গড়মূল্যের ওপর ভিত্তি করে ১৯ জেনেরিকের ৫৩টি ওষুধের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য বৃদ্ধি করে; যার মধ্যে প্যারাসিটামলও রয়েছে। প্যারাসিটামল ৫০০ এমজি ট্যাবলেটের দাম করা হয় এক টাকা ২০ পয়সা, আগে ছিল ৭০ পয়সা। প্যারাসিটামল ১০০০ এমজি ট্যাবলেটের দাম করা হয় ২ টাকা ২৫ পয়সা, আগে ছিল ১ টাকা ৪ পয়সা। প্যারাসিটামল সিরাপের দাম শতকরা ৬১ শতাংশ থেকে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

দাম বাড়ানোর বিষয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও উপপরিচালক মো. নূরুল আলম বলেন, ‘ডলারের দাম বাড়ার কারণে ওষুধ উৎপাদনে ব্যয় বেড়েছে। এক্ষেত্রে শুধু কাঁচামাল ও মোড়কসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়াকে বিবেচনা করা হয়েছে।’

যেভাবে নির্ধারিত হয় অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দাম

প্রাইস ফিক্সেশন পলিসি-১৯৯২ অনুযায়ী, অত্যাবশ্যকীয় তালিকাভুক্ত যেসব ওষুধের দাম নির্ধারণ করা নেই অথবা কোনো ওষুধের দাম সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি করতে চাইলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে আবেদন করতে হয়। এক্ষেত্রে ওষুধটির সক্রিয় ও সহযোগী উপাদান কেনার ইনভয়েস, বিল অব এন্ট্রি, কস্টিং শিট জমা দিতে হয়। এরপর অধিদপ্তরে থাকা রেকর্ড থেকে সক্রিয় ও নিষ্ক্রিয় উপাদানের গত ছয় মাসের দামের গড়ের (এইচএস কোড অনুযায়ী শুল্ক ও অন্যান্য খরচ ৮ শতাংশ ধরে) সঙ্গে পণ্যটির প্যাকিং উপকরণের দাম যোগ করে যে টাকা দাঁড়ায়, তাকে নির্ধারিত মার্কআপ দিয়ে গুণ করে দাম (ভ্যাট ছাড়া) নির্ধারণ করা হয়। অত্যাবশ্যকীয় তালিকাভুক্ত ওষুধের দাম নির্ধারণের সূত্র হচ্ছে- {কাঁচামালের দাম (সক্রিয়+নিষ্ক্রিয়) + প্যাকিং উপকরণের দাম} x মার্কআপ = এমআরপি (ভ্যাট ছাড়া)।

নির্ধারিত মার্কআপগুলো হচ্ছে- পুনরায় মোড়কজাত ওষুধের ক্ষেত্রে ১.৫০, মুখে খাওয়ার সব রকম ওষুধ (অ্যান্টিবায়োটিক ও জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি ছাড়া) ও ট্রপিক্যাল প্রিপারেশনের ক্ষেত্রে ২.২৫, মুখে খাওয়ার সব অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের ক্ষেত্রে ২.৩০, স্টেরাইল ওষুধ ও জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ির ক্ষেত্রে ২.৮০, অ্যাসেপটিক প্রিপারেশনের ক্ষেত্রে ৩.৪০, স্টেরয়েড ও হরমোনজাতীয় ওষুধের ক্ষেত্রে ৩.৪০, অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিফাংগাল, অ্যান্টি-ইনফেকটিভ ওষুধের ক্ষেত্রে ২.৩০, সাসটেইন রিলিজ ট্যাবলেট বা ক্যাপসুলের ক্ষেত্রে ২.৮০ ও ডিসপারসিবল ট্যাবলেটের ক্ষেত্রে ৩.০০।

তালিকার বাইরের ওষুধের দাম যেভাবে

প্রাইস ফিক্সেশন পলিসি-১৯৯২ অনুযায়ী, অত্যাবশ্যকীয় তালিকার বাইরে থাকা ওষুধের মূল্য ‘নির্দেশক মূল্য’ হিসেবে পরিচিত; যা ওষুধ কোম্পানি ‘ইচ্ছেমতো’ নির্ধারণ করে। এসব ওষুধের ভ্যাট প্রদান করতে ‘মূল্য সনদের’ জন্য নির্ধারিত ফরমেট অনুযায়ী ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে আবেদন করতে হয়। মূল্য সনদের আবেদনের সঙ্গে প্রস্তাবিত মূল্য, বৈধ মেয়াদের অ্যানেক্সার, সক্রিয় উপাদানের অনুমোদিত ব্লকলিস্টের কপি, পুনর্নির্ধারণের ক্ষেত্রে আগে ইস্যু করা মূল্য সনদের কপি দিতে হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর শুধু ভ্যাট প্রদানের জন্য মূল্য সনদ ইস্যু করে থাকে।

অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দামেও তারতম্য

নিয়ম অনুযায়ী, অভ্যন্তরীণ বাজারের অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের ক্ষেত্রে উৎপাদকরা দামে তারতম্য করতে পারবেন না, সরকারনির্ধারিত দামেই বিক্রি করতে হবে। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিভিন্ন কোম্পানির অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দামের ক্ষেত্রে তারতম্য রয়েছে।

ওমিপ্রাজল ২০ এমজি ক্যাপসুল অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ হওয়ার পরও দামের ক্ষেত্রে তারতম্য আছে। কোম্পানিভেদে ওষুধটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দাম যথাক্রমে ২ টাকা ও ৭.১০ টাকা। ওমিপ্রাজল ২০ এমজি ক্যাপসুলের র‌্যাংগস ফার্মার দাম ২ টাকা; আর সান্ডোজের (নোভার্টিস ডিভিশন) দাম ৭.১০ টাকা। একই ওষুধ গণস্বাস্থ্য ফার্মা দিচ্ছে ৩ টাকায় ও ডেল্টা ফার্মা ৪ টাকায়। আবার বেক্সিমকো, ইউনিমেড ইউনিহেলথ, ইনসেপ্টা, ইবনে সিনা, এসকায়েফ, রেনেটাসহ বিভিন্ন কোম্পানি দিচ্ছে ৫ টাকায়। আবার স্কয়ার তা বিক্রি করছে ৬ টাকায়।

ফ্লুক্লোক্সাসিলিন ৫০০ এমজি ক্যাপসুলÑ এটিও অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ। এরপরও কোম্পানিভেদে ওষুধটির দামে তারতম্য আছে। গণস্বাস্থ্য ফার্মা ওষুধটি দিচ্ছে ৭ টাকায়। অন্যদিকে এসিআই ওষুধটি বিক্রি করছে সর্বোচ্চ ১৪ টাকায়। একই ওষুধ রেনেটা ও ইনসেপ্টা ১০ টাকায়, বেক্সিমকো, এসকায়েফ ও ইবনে সিনা ১০.৫০ টাকায় এবং হেলথকেয়ার ১১ টাকায় বিক্রি করছে।

জানতে চাইলে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও উপপরিচালক মো. নূরুল আলম বলেন, ‘অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দামে তারতম্য হওয়ার কথা নয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’ তবে অত্যাবশ্যকীয় তালিকাভুক্ত নয়, এমন ওষুধের দামে কোম্পানিভেদে বড় পার্থক্য থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ওষুধের মান, প্যাকেজিংয়ের তারতম্যসহ নানা কারণে অত্যাবশ্যকীয় তালিকার বাইরের ওষুধের দামে পার্থক্য থাকে। কেউ ভারত থেকে স্থলপথে কাঁচামাল নিয়ে আসে, আবার কেউ বিমানে ইউরোপ থেকে কাঁচামাল আনে। এসব কারণে দামের পার্থক্য থাকবেই। যার যার খরচ অনুযায়ী হিসাব করে দাম ঠিক করে।

ইউরোপ থেকেও নিম্নমানের কাঁচামাল আসতে পারে, যেহেতু আমদানি করা ওষুধের কাঁচামালের বিশুদ্ধতা ওষুধ প্রশাসন পরীক্ষা করে দেখে না। এছাড়া আমদানি করা কাঁচামালের দাম নিয়ে নয়-ছয় করার প্রচুর সুযোগ রয়েছেÑ বিষয়টি এভাবে উত্থাপন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমদানির সময় মাঝেমধ্যে মিথ্যা ঘোষণা দেওয়ার কথা আমরা শুনি। তবে অনিয়ম ধরার জন্য আমরা সব সময়ই চেষ্টা করি।’

ভ্যাটের খড়গ!

ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ মূসক বা ভ্যাট দিতে হয়। আর ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাট দিতে হয় ২.৪ শতাংশ। মোট ভ্যাট ১৭.৪ শতাংশ।

২০২২ সালের ২৭ মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ভ্যাট বিভাগ থেকে জারি করা এক সাধারণ আদেশে ‘ওষুধের ক্ষেত্রে মূসক নির্ধারণ ও পরিশোধপদ্ধতি’ জানানো হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, ‘ওষুধের মূল্য স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক ভোক্তা পর্যায়ে মূসকসহ সর্বোচ্চ খুচরামূল্য (প্রতি একক) নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক ট্রেড প্রাইসের ওপর উৎপাদন ব্যয়ের ১৫ শতাংশ মূসক এবং ব্যবসায়ী পর্যায়ে ১৬ শতাংশ মূল্য সংযোজন এবং তার ওপর ১৫ শতাংশ মূসক অর্থাৎ উৎপাদন পর্যায়ের সরবরাহমূল্যের ওপর ২.৪ শতাংশ মূসক আরোপ করে সর্বোচ্চ খুচরামূল্য (প্রতি একক) নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ শতকরা হিসেবে ভোক্তা পর্যায়ে সর্বোচ্চ খুচরামূল্য (প্রতি একক) হবে ১৩৩.৪ টাকা [১০০ টাকা (উৎপাদন পর্যায়ে সরবরাহ মূল্য যা মূলত: ঔষধ প্রশাসন নির্ধারিত ট্রেড প্রাইস)+১৫ টাকা (উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ মূসক)+ ১৬ টাকা (ব্যবসায়ী পর্যায়ে ১৬ শতাংশ মূল্য সংযোজনের পরিমাণ)+ ২.৪ টাকা (ব্যবসায়ী পর্যায়ে ২.৪ শতাংশ মূসক যা উৎপাদন পর্যায়ের সরবরাহ মূল্য/ট্রেড প্রাইসের ওপর আরোপনীয়)] উল্লেখিত ভোক্তা পর্যায়ের সর্বোচ্চ খুচরামূল্য (প্রতি একক) হতে কর ভগ্নাংশের (২.৪/১৩৩.৪) সমপরিমাণ অর্থ বিয়োগ করে ব্যবসায়ী পর্যায়ের সরবরাহ মূল্য নির্ধারণ করতে হবে।’

অর্থাৎ এই ১৭.৪ শতাংশ ভ্যাটের টাকা ও ফার্মেসির মালিকদের লাভ যোগ করেই সর্বোচ্চ খুচরামূল্য ঘোষণা দেন ওষুধ প্রস্তুতকারকরা। ফলে ফার্মেসি বা ভোক্তা পর্যায়ে কোনো আলাদা ভ্যাট দিতে হয় না।

তবে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসা খরচ কমাতে দেশে প্রস্তুত হয় এমন ওষুধের (ক্যানসার নিরাময়ের ওষুধ) কাঁচামাল আমদানিতে কর অব্যাহতির সুবিধা দেওয়া এবং ম্যালেরিয়া ও যক্ষ্মার ওষুধ উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতির কথা বলা হয়েছে। ফলে দাম কমবে ক্যানসার, ম্যালেরিয়া ও যক্ষ্মার ওষুধের। এ ছাড়া রেয়াতি সুবিধা দেওয়া হয়েছে ইনজেকশনের আইভি ক্যানুলা উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল সিলিকন টিউব ও ডায়াবেটিক ব্যবস্থাপনার ওষুধ উৎপাদনে বিশেষ কিছু কাঁচামাল আমদানিতে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, ‘ক্যানসার ও ডায়াবেটিসের ওষুধের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক মওকুফ করার বিষয়টি খুবই ভালো পদক্ষেপ। সব ধরনের মেডিকেল কাঁচামাল শুল্কমুক্ত হওয়া উচিত। একই সঙ্গে ওষুধের মূল্য নির্ধারণে কড়া নজরদারিও দরকার। কারণ কেউ কেউ কাঁচামালের দাম বেশি দেখিয়ে ব্লকলিস্ট অনুমোদন নেয়, পরে নিয়ে আসে কম দামের নিম্নমানের কাঁচামাল।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেন, ‘ওষুধের দাম ঠিক করার সময় কাঁচামালের মূল্য বিবেচনা করা হয়। এই সুযোগে কোম্পানিগুলো কারসাজি করে কাঁচামালের খরচ বেশি দেখিয়ে ওষুধের বাড়তি দাম অনুমোদন নেয়। আবার কিছু কোম্পানি ইউরোপ থেকে কাঁচামাল আনার কথা বলে ধোঁকাবাজি করে। তারা বলে বেড়ায়, ইউরোপ থেকে কাঁচামাল আনার ফলে তাদের ওষুধের দাম বেশি। তার মানে, ভারত থেকে যারা কাঁচামাল আমদানি করে সেগুলো নিম্নমানের? তাহলে সেগুলোর মান ল্যাবে পরীক্ষা করার জন্য তারা সরকারকে বলে না কেন? ভারত থেকে কে কী এনেছে, ইউরোপ থেকে কে কী এনেছে, কাঁচামালগুলো কতটা মানসম্মত এগুলো সরকার দেখে না কেন? এটা করলেই তো হয়। ওষুধের কাঁচামালের ভুয়া খরচ দেখিয়ে অনেকে দাম অনুমোদন নেয়। যার কারণে একই ওষুধের কোম্পানিভেদে একেক দাম। একই ওষুধে কাউকে ৬ টাকা, কাউকে ১২ টাকা দাম দিতে হচ্ছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কেন এসব দাম অনুমোদন দেয়, এটাও একটা রহস্যের বিষয়।’

কাঁচামালের পেছনে ব্যয় কমাতে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ২১৬ একর জমির ওপর সরকার এপিআই (অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট) পার্ক করে দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘২০২১ সালে এপিআই পার্ক উদ্বোধন করা হলেও ওষুধ কোম্পানিগুলো ইচ্ছে করে সেখানে নিজেদের কারখানা গড়ে তোলেনি। অথচ সেখানে কেন্দ্রীয় ইটিপি ব্যবস্থাও সরকার করে দিয়েছে।’ এর কারণ জানিয়ে অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেন, ‘এখন বিদেশ থেকে কাঁচামাল আমদানিতে খরচ বেশি হচ্ছে জানিয়ে ইচ্ছেমতো দাম অনুমোদন নিতে পারছে কোম্পানিগুলো। দেশে কাঁচামাল উৎপাদন করা হলে তারা আমদানির নামে আর নয়-ছয় করার সুযোগ পাবে না। সরকারের উচিত, দেশে কাঁচামাল উৎপাদন করতে কোম্পানিগুলোকে বাধ্য করা। তখন দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানিও করা যাবে।’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা, ১৯৮২ সালের ওষুধনীতির অন্যতম প্রণেতা প্রয়াত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মৃত্যুর আগে গত বছর এ প্রতিবেদককে বলেছিলেন, ‘ওষুধের দাম নির্ধারণে দুর্নীতি হচ্ছে। সব ওষুধের দাম সরকার নির্ধারণ করে দিলে এক সপ্তাহের মধ্যে বিরাট ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।’

তবে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও উপপরিচালক মো. নূরুল আলম বলেন, ‘ওষুধের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা কোম্পানির হাত থেকে নিয়ে ফেলা বাস্তবসম্মত নয়। তারা অনেক ঝুঁকি নিয়ে বিনিয়োগ করেছেন। তাদেরকে যদি পর্যাপ্ত লাভ করার সুযোগ দেওয়া না হয়, তাহলে তারা ব্যবসায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন।’ প্রতিদিনের বাংলাদেশ

পাঠকের মতামত

ন্যূনতম খাদ্য গ্রহণে খরচ করতে হচ্ছে দারিদ্র্যসীমার ব্যয়ের চেয়ে প্রায় ৭০% বেশি

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে সুস্থভাবে জীবনধারণের জন্য প্রতিদিন যে পরিমাণ খাদ্যশক্তি (২ হাজার ১০০ ...

রোহিঙ্গাদের আত্তীকরণের পক্ষে নয় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র সচিব

রোহিঙ্গাদের আত্তীকরণ বাংলাদেশের জন্য বিবেচনাযোগ্য বিকল্প নয় বলে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) ঢাকা প্রধান ল্যান্স ...